Breaking News

ভালোবাসার বড়দিন

Image
 

শিলিগুড়িবার্তা ওয়েবডেস্ক, ২৫ ডিসেম্বর : শীত, বড়দিন, বছর শেষ এবং নতুন বছর -- সব মিলিয়ে একটা জমজমাট উৎসবের মরশুম। আর ভোজনরসিক বাঙালির ক্ষেত্রে যে কোনও উৎসবই মুখ্যত খাদ্য উৎসবে পরিণত হয়, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। 
এই যে প্রকৃতি ও পরিবেশ ঘিরে একটা আনন্দের বাতাবরণ, এটা কোথাও আমাদের দারুণ ভাবে নস্টালজিক করে তোলে। আমরা সবাই ফিরে যাই সেই অমল শৈশবে। 
আমরা, যারা প্রবীনের কোঠায় তাদের স্মৃতির বৃহৎ পুটলিটি খুলে যায় এই দিনগুলো এলেই। পাড়ায় পাড়ায় পিঠে পুলি নিয়ে রীতিমতো উৎসব শুরু তখন। আমাদের শৈশব মানেই তো পাড়ার সব বাড়িতে অবাধ বিচরণ। আমার ঘরে যে পিঠে হয়নি, সেটা নিশ্চয়ই অন্য কোনও বন্ধুর মা বানাচ্ছেন। পাড়ার কাকিমা, মাসীমারাও জানতেন পাড়ার কোন বাচ্চার কোন পিঠে পছন্দ। আমাদের সেই অমল শৈশব ধীরে ধীরে বদলে গেল। পাড়া সংস্কৃতিটাই প্রায় বিলুপ্তির পথে।


আমাদের শৈশবে বাড়িতে কেক তৈরি রীতিমতো বিরল ঘটনা। এক বন্ধুর বাবা, বড় সরকারি চাকুরে তিনি। ওঁদের বাড়ির চালচলন কিছুটা সাহেবি কেতার ছিল। বন্ধুর মা বড়দিনে কেক বানাতেন। আমাদের পুরো বন্ধুটিমের জন্য সে এক বিস্ময়কর ব্যাপার ছিল। এর বাইরে কেক বলতে নিউ মার্কেটের নাহুম, সে তো কালে ভদ্রে ভাগ্যে জোটার বিষয়। তারপর এলো ফ্লুরি। একে একে ক্যাথলিন এবং আরও নাম। বড়ুয়ার কেক, তারও বেশ চাহিদা ছিল।
এখন তো কেক, পেস্ট্রি, প্যাটি নিয়ে বাজারে প্রচুর ব্র্যান্ড হাজির। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি থেকে অন লাইনে কেক কেনা, বাঙালি সব উপলক্ষেই সময়ের সঙ্গে চলতে শিখে গেছে।
কেক তৈরির ক্ষেত্রেও গৃহবধূ থেকে পাড়ার ইয়ং স্টার,  কেউ পিছিয়ে নেই। বানানোর সরঞ্জাম থেকে কেক তৈরির উপকরণ সেও বাজারে অজস্র। চটজলদি সব প্রস্তুত। মা-ঠাকুমাদের মতো সারা দিন বসে পিঠে বানানোর সময় বা পরিস্থিতি কোনওটাই নেই। ছেলেমেয়ে সকলেই দিনরাত দৌড়োচ্ছে।
পিঠে পুলি না কেক পেস্ট্রি , এই নিয়ে এক সময় প্রচুর বিতর্কের জাল বোনার চেষ্টা করেছি আমরা। মানে মিডিয়ার পক্ষে লেখালেখি, আলোচনা হয়েছে। আজ তারও আর অবকাশ নেই।
সব উৎসবে সামিল আমরা। সব খাদ্যেই রুচি। উৎসাবপ্রিয়, উদার বাঙালি পিঠে ও কেক দুইই বরণ করেছে। তফাৎ একটাই, পাটিসাপটা, পুলি ইত্যাদি দোকানেই পাওয়া যায়। পায়েস বোধহয় এখনও ঘরেই বানানো হয়। সে যাই হোক, আসল কথা হলো আনন্দ। উৎসবে, পিঠে খেলাম না কেক, তার থেকেও বড় ভালোবাসার আদানপ্রদান। বড় দিন এবং বছর শেষের শীত উৎসবে সেটাই থাকুক অঙ্গীকার‌। ভালো থাকা ও ভালো রাখার বার্তা।

প্রতিবেদনে অজন্তা সিনহা।

Share With:


Leave a Comment

  

Other related news