Breaking News

সাংসদ ডক্টর সুকান্ত মজুমদারের উদ্যোগে আবিষ্কৃত হতে পারে ভারতের নয়া ইতিহাস।

Image
 

কমল কুমার বিশ্বাস,বালুরঘাট,২৪ শে জুলাই :শুধু মাত্র রক্ষণাবেক্ষণ ও খনন কার্য মাঝপথে থেমে যাওয়ার কারণে এক প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস এখনও মাটির তলায় । অথচ ইতিহাস গবেষকরা বলছেন বানগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যালোচনা প্রাচীন ভারতের ইতিহাস বদলে দিতে পারে। এখানে খনন কার্য শুরু হলেও যতটুকু হওয়া উচিত ছিল তা না হওয়াতেই মাটির নিচে কবরে শায়িত হয়ে আছে এক অজানা সমৃদ্ধ ভারতের ইতিহাস । একখানি সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ বলে অভিমত স্থানীয়দের। ঐতিহাসিক মতে ভারতের ইতিহাসে প্রথম বারুদের ব্যবহার হয়েছিল ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে; কিন্তু পুনর্ভবা নদীর চরে পাওয়া কামানের গোলা ভারতের ইতিহাসের এই ধারণাকেই বদলে দিতে পারে । কারণ ১৫২৬ এর কয়েকশো বছর আগের সভ্যতা হল বাণগড় সভ্যতা । পাল ও সেন যুগে এই বানগড় ছিল বলে অনেকের অনুমান । জানা যায় বানগড় থেকে প্রাপ্ত গোলাগুলির একটি ভারতীয় সেনারা সংগ্রহ করে রেখেছে তাদের সংগ্রহশালায় । ১৯৩৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কে জি গোস্বামীর নেতৃত্বে প্রথম খনন কার্য শুরু হয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর শহরের  বানগড়ে এবং তখন পাল যুগের একটি মন্দির আবিষ্কৃত হয়েছিল বলে জানা যায় । এরপরে আর কোন চেষ্টাই নজরে আসেনি বাণগড় কেন্দ্রিক সভ্যতা এবং তার ইতিবৃত্ত জানার ব্যাপারে। এবং এই খননকার্যের পরেই নজরে আসে বানগড় । এরপর আর কোনো চেষ্টা পরিলক্ষিত হয়নি । 
          অবশেষে বিভিন্ন মহলের দাবিতে ২০০৮-০৯  সালে ফের খনন কার্য শুরু হয় । ঐতিহাসিক মতে বাণগড় প্রাচীন কোটিবর্ষ বা দেবিকোট নামে পরিচিত । এই খননকার্যে পাওয়া যায় পাল যুগের স্তম্ভ বিশিষ্ট একটি অপরিসর কুণ্ড, একটি শস্যাগার, লাল ও কালো মাটির বিভিন্ন পাত্র, তামার সামগ্রী, প্রাচীন মুদ্রা ও দেবদেবীর মূর্তি, তামা ও নানান ধাতুর বাসনপত্র এবং গহনা, বিভিন্ন মূর্তি খচিত পট, বুদ্ধদেবের ব্যাসাল্ট পাথরের মস্তক, ছোট নৌকা । খননের ফলে প্রাপ্ত সামগ্রী বেশিরভাগই বালুরঘাট কলেজের মিউজিয়ামে স্থান পেয়েছে বলে জানা যায় । তাই এহেন সভ্যতা যা খননকার্যের অভাবে মাটির নিচে পড়ে রয়েছে তা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সমাজের ইতিহাস সচেতন মানুষজন । অনুমান এই সভ্যতা প্রায় ২৫০০ বছর পূর্বের সভ্যতা ।
                   এতোকাল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে স্বাধীনতার 
পরবর্তীতে কোন সাংসদকেই সংসদে এভাবে সরব হতে দেখেননি সাধারণ মানুষ । আবার অনেকে বলছেন জেলার ভূমিপুত্র হওয়ায় এবং  উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ায় বর্তমানের সাংসদ ডক্টর সুকান্ত মজুমদার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার খুটিনাটি বিষয় নিয়ে যেভাবে সংসদে সরব হয়েছেন তাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তথা বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের পরিচয় গোটা বিশ্ব দরবারে ঘটছে তা ইতিপূর্বে ঘটেনি। শপথ নেওয়ার পর থেকেই কোনো না কোনো ইস্যু নিয়ে ভারতের পার্লামেন্টে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সুকান্ত বাবু । তার নবতম প্রয়াস আজ সংসদের ৩৭৭ নম্বর স্লট এ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শন যুক্ত স্থান বানগড় নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা। মূলত সংসদে জিরো আওয়ার এর মত তিনশো সাতাত্তর নামে একটি স্লট রয়েছে; যেখানে সপ্তাহে একদিন করে সাংসদরা নিজেদের সংসদীয় ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয়,সমস্যা তুলে ধরেন। প্রত্যেক শুক্রবার সেই নির্দিষ্ট বিষয় জমা দিলে তার পরের সপ্তাহে লোকসভায় সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়; আর যদি আলোচনা না হয় তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চলে যায় । আজকে সুকান্ত বাবু বান - গড়ের বিষয়টি এনেছেন,আশা করা যায় আমরা খুব শীঘ্রই বানগড়ের নানা অজানা তথ্য ,অজানা ইতিবৃত্ত জানার সুযোগ পাবো সুকান্ত বাবুর সৌজন্যে এবং সেই সঙ্গে ভারতের ইতিহাসের ক্ষেত্রে খুলে যাবে এক নবদিগন্ত ।

Share With:


Leave a Comment

  

Other related news