শিক্ষকদের যোগ্যতা অনুযায়ী বেতনের দাবিতে চলা শিক্ষক আন্দোলনের সমর্থনে কলম ধরলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশুমণ্ডী পূর্ব চক্রের বেড়ইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তথা এই জেলার বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী বিভাস দাস, বালুরঘাট

। প্রতিবাদ ।
জাতির মেরুদণ্ড আমরা
সারি-সারি আছি শুয়ে !
সরকার কি থাকবে এখনও
মুখখানা ঘুরিয়ে !
ত্রিপল বিছানো সুখ-শয্যায়(?)
আকাশ মাথার 'পরে !
অবর্ণনীয় কষ্ট সবার
রোদ-বৃষ্টি ও ঝড়ে !!
আমরা কেউই নইকো তথা-
কথিত শরণার্থী !
পথেই নেমে পড়েছি আমরা
হয়ে সুবিচার-প্রার্থী!!
করি নি আমরা সে'রকম কোনও
মামা-বাড়ির আব্দার !
যেটা চাইছি, সেটা আমাদের
ন্যায্য এক অধিকার !!
হে শ্রদ্ধেয় শিক্ষামন্ত্রী,
বলুন, আপনি কবে
মানবেন দাবি, দু'চারটি প্রাণ
অকালে ঝ'রলে তবে ?
আমাদেরই কোনও পূর্বসূরীর
শক্ত দু'হাত ধ'রে,
আপনারা সব নিজ-কেরিয়ার
নিয়েছিলেন গ'ড়ে !
ভেবে দেখুন, তাঁরাই তো আজ
জঠর-জ্বালায় মরছে !
"পুরানো সেই দিনের কথা"
মনে কি আর পড়ছে ?
নিজ-অধিকার চাওয়াতেই মার
খাওয়ালেন বেশ ক'রে!
আমাদেরই কিছু সহ-যোদ্ধাকে
দিলেন হাজতে ভ'রে !!
আমরা সবাই টিচার তো, নই
চোর বা ডাকাত কেউ !
নিজ-অধিকার ছিনিয়ে নিতেই
করছি যে "ঘেউ-ঘেউ" !
"ঘেউ-ঘেউ" ব'লে কুকুরের সাথে
করেছেন তুলনাটা !
নুনের ছিঁটেও দিয়েছেন ঘা-য়ে
বেড়েছে যন্ত্রণাটা!!
তবুও দেখছি, আপনারা কেউ
ভেবে দেখছেন না তো !
অনশন-স্থলে এসে একবার
করেন নি সাক্ষাৎও !!
বলুন দেখি, আপনারা কি
ভাবছেন সব্বাই !
আমাদের এই পথেই বসিয়ে
দিয়েছেন আপনারাই !!
ন্যায্য পাওনা চাইলে পরেই
টাকা নেই-নেই রব !
কিন্তু আপন বেতন আর ভাতা
বাড়িয়ে নিলেন সব !
যেহেতু এখন আপনারা সব
রয়েছেন সরকারে,
যুক্তিযুক্ত দাবি নিয়ে তাই
গিয়েছি যে বারে-বারে !
কখনও বা দেখা করার সময়
থাকে না কারুর হাতে,
কখনও বা ফিরে এসেছি আমরা
"অপমান" নিয়ে সাথে,
"সঠিক বেতন" চাইছি আমরা
"যোগ্যতা" অনুসারে !
পেটের জ্বালায় ছুটে-ছুটে গেছি
সরকারের ঐ দ্বারে !
এই বাজারে এই বেতনে
চালানো সংসার,
কতো যে কঠিন, আপনারা কেউ
ভেবেছেন একবার ?
প্রাপ্যটাই তো চাইছি আমরা,
চাইছি না কোনও ভিক্ষা !
আমাদের 'পরে ভার দিয়েছেন
সামলাতে শিশু-শিক্ষা!!
নানান রাজ্য দেয় আমাদের
ন্যায্য বেতন-ক্রম !
এই রাজ্যের সরকার সেটা
দিতে কেন অক্ষম ?
যোগ্যতা চাই এইচ.এস. আর
মাধ্যমিকের মাইনে,
অনেক সয়েছি, আর কিছুতেই
সহ্য করতে চাই নে!!
ভাববেন না, টাকার প্রতি
আমাদের খুবই লোভ !
সম্মিলিত সব আমাদের
পুঞ্জীভূত এ ক্ষোভ !!
সংসার-ঘানি টানতে-টানতে
শিরদাঁড়া গেছে বেঁকে,
"অনশন" ছাড়া গতি নেই, পিঠ
দেওয়ালে গিয়েছে ঠেকে !!
বইতে-বইতে মাথার উপরে
ভারী সংসার-বোঝা !
জাতির মেরুদণ্ডদেরই
শিরদাঁড়া নেই সোজা !!
অনেক সময় দিয়েছি আমরা
আর তো সময় নাই,
যে ক'রেই হোক, এবার কিন্তু
পি.আর.টি.-টাই চাই!
এখনও যদি শুধরে না নেন,
না বদলান মত,
কখনও কিন্তু ক্ষমা করবে না
আগামী ভবিষ্যৎ !!
বালুরঘাট থেকে প্রতিনিধি কমল কুমার বিশ্বাসের রিপোর্ট।
Leave a Comment